জাল আধার কার্ড তৈরী চক্রের ৬ পান্ডা ধৃত : চাঞ্চল‍্য এলাকাজুড়ে

26th October 2020 5:58 pm বর্ধমান
জাল আধার কার্ড তৈরী চক্রের ৬ পান্ডা ধৃত : চাঞ্চল‍্য এলাকাজুড়ে


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( বর্ধমান ) :  জাল আধার কার্ড তৈরি চক্রের ছয় পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ।রবিবার বিকালে পূর্ব  বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার পুলিশ  পালিশগ্রামে থাকা জালিয়াতদের ডেরায় হানা দিয়ে ছয় জনকে ধরেফেলে। জেরায় ধৃতরা  জাল আধার কার্ড তৈরির কথা কবুল করার পর পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে । ধৃতদের ডেরা থেকে পুলিশ জাল আধার কার্ড তৈরির  কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ , স্ক্যানার ও প্রিন্টার  বাজেয়াপ্ত করেছে । এই ঘটনা জানাজানি হতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে মঙ্গলকোটের  বাসিন্দা মহলে ।  পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল মোরসেলিম সেখ ,নুর আলম সেখ ,রবিউল আলম সেখ ,তাহের সেখ, সামিম সেখ ও  দেবজ্যোতি মল্লিক। ধৃতদের মধ্যে দেবজ্যোতি শুধুমাত্র শহর বর্ধমানের বাসিন্দা। বাকি ধৃতদের  বাড়ি  মঙ্গলকোটের কৈতন , নিমতা ,পালিশগ্রাম ও  ধরমপুরে । জালিয়াতি ও প্রতাড়নার একাধীক  ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ  সোমবার ছয় ধৃতকে পেশ করে কাটোয়া মহকুমা আদালতে । বিচারক ধৃতদের জামিন নামাঞ্জুর করে বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়ে ৪ নভেম্বর ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন । এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত রয়েছে এবং চক্রে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে ।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের  নাগরিকদের আধায় কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। সরকারী যেকোন কাজে এখন নাগরিকদের আধারকার্ড দাখিল করতে হচ্ছে ।সিএএ ,এনআরসি পাশ হবাবার পর থেকে আধার কার্ড  তৈরির জন্য মঙ্গলকোটের বাসিন্দারাও উদগ্রীব হয়ে ওঠেন ।পুলিশ জানিয়েছে ,সেই সূযোগকে কাজে লাগিয়ে মঙ্গলকোটে সক্রীয়  হয় এই জাল আধার কার্ড তৈরির চক্রটি।তারা মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামে একটি কাউন্টার খুলে বসে । মঙ্গলকোটের বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষ আধার কার্ড করানোর জন্য সেখানে হাজির হচ্ছিলেন ।  ৬০০- ৮০০  টাকা দিলেই ওই কাউন্টার থেকে মিলছিল আধার কার্ড । তবে ব্যাঙ্ক কিংবা পোস্ট অফিসে ওই আধার কার্ড দাখিল করার পর অনেকেই জানতে পারেন ওই কাউন্টার থেকে তাঁদের জাল আধার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে । বিষয়টি জানতে পারেন মঙ্গলকোট থানার ওসি মিথুন ঘোষ । পুজোর ছুটির সময়ে  রবিবার  বিকালেও ওই কাউন্টারে আধার কার্ড কারার কাজ চলছে জেনে ওসি অন্য পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে হানা দেন । সবকিছু খতিয়ে দেখে পুলিশ নিশ্চিৎ হয় প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে  অপরের  আধার কার্ডের ডাটাএন্ট্রি চুরি করে ছয় প্রাতারক মিলে জাল আধার কার্ডের কারবার চালাচ্ছে । এরপরেই ছয়জনকে ধরে পুলিশ থানায় নিয়ে গিয়ে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালায় । জেরায় ধৃতরা জাল আধার কার্ড তৈরির কথা কবুল করার পরেই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে । মঙ্গলকোটের বাসিন্দারা বলেন, জালিয়াতরা  পালিশগ্রামের ইজাজুল সেখের  বাড়িতে বসে  জাল আধার কার্ড তৈরির চক্রটি চালাচ্ছিল । 
অনেকের সঙ্গেই তারা প্রতারণা করেছে ।  জালিয়াতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন মঙ্গোলকোটের বাসিন্দারা । 
 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।